রক্ত তঞ্চনের ১৩ টি ক্লটিং ফ্যাক্টরের নাম এবং কাজ

রক্ত তঞ্চনের ১৩ টি ক্লটিং ফ্যাক্টরের নাম এবং কাজ
রক্ত তঞ্চনের ১৩ টি ক্লটিং ফ্যাক্টরের নাম এবং কাজ

রক্ত জমাট বাঁধা বা রক্ত তঞ্চন (Blood Clotting)

মানবদেহে রক্তবাহিকার অভ্যন্তরে রক্ত জমাট বাঁধতে পারেনা । কারণ বাহিকার অন্তঃস্থ প্রাচীর থাকে মসৃণ এবং রক্তে হেপারিন (heparin) নামে এক ধরনের মিউকোপলিস্যাকারাইডের সংবহন। দেহের কোথাও ক্ষত সৃষ্টির ফলে কোনো রক্তবাহিকার এন্ডোথেলিয়াম ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তপাত বন্ধের উদ্দেশে ও সংক্রমণ প্রতিরোধে যে জটিল জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ফাইব্রিন জালক সৃষ্টির মাধ্যমে ক্ষতস্থানে রক্তকে থকথকে পিন্ডে পরিণত করে সে প্রক্রিয়াকে রক্তের জমাট বাঁধা বা রক্ত তঞ্চন বলে। এ প্রক্রিয়ায় অণুচক্রিকা ও রক্তরসে উপস্থিত ১৩ ধরনের ক্লটিং ফ্যাক্টর (clotting factor গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ ৪টি ফ্যাক্টর হলো-

  1.  ফাইব্রিনোজেন
  2. প্রোথ্রম্বিন
  3. থ্রম্বোপ্লাস্টিন 
  4.  Ca2+

রক্ত তঞ্চনের ১৩ টি ক্লটিং ফ্যাক্টরের নাম এবং কাজ

ফ্যাক্টরের নাম ফ্যাক্টরের কাজ
1.ফ্যাক্টর-I বা ফাইব্রিনোজেন এটি গ্লোবিউলিন জাতীয় প্রোটিন। তঞ্চনের সময় ফাইব্রিনে পরিণত হয়।
2.ফ্যাক্টর-II বা প্রোথ্রম্বিন এটি প্লাজমা প্রোটিন। ভিটামিন K-র উপস্থিতিতে যকৃতে সংশ্লেষিত হয়। তঞ্চনের সময়ে প্রথিনে পরিণত হয়।
3.ফ্যাক্টর-III বা থ্রম্বোপ্লাস্টিন এটি বিনষ্ট টিস্যুকোষ বা ভাঙা অণুচক্রিকা থেকে নিঃসৃত হয়। এটি ক্যালসিয়াম আয়নের সহায়তায় প্রোথ্রম্বিনকে থ্রম্বিনে পরিণত করে।
4.ফ্যাক্টর-IV বা ক্যালসিয়াম ক্যালসিয়াম আয়ন একাধারে প্রমোপ্লাস্টিন উৎপাদনে সাহায্য করে এবং অপর-দিকে প্রোথ্রম্বিনকে থ্রম্বিনে পরিণত করে।
5.ফ্যাক্টর-V বা ল্যাবাইল ফ্যাক্টর বা প্রোঅ্যাকসেলারিন প্লাজমায় অবস্থিত প্রোটিন জাতীয় এ পদার্থটি প্রোগ্রন্থিনকে গ্রন্থিনে পরিণত করে।
6.ফ্যাক্টর-VI বা অ্যাকসেলারিন এটি প্রকল্পিত।
7.ফ্যাক্টর-VII বা স্টেবল ফ্যাক্টর বা প্রোকনরভারটিন প্লাজমায়ে অবস্থিত এ প্রোটিনটি থ্রম্বোপ্লাস্টিন উৎপাদনে সাহায্য করে।
8.ফ্যাক্টর-VIII বা এন্টি হিমোফিলিক ফ্যাক্টর (AHF) এটি প্লাজমায় থাকে এবং থ্রম্বোপ্লাস্টিন সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
9.ফ্যাক্টর-IX বা ক্রিসমাস ফ্যাক্টর এটি প্লাজমায় থাকে এবং থ্রম্বোপ্লাস্টিন সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
10.ফ্যাক্টর-X বা স্টুয়ার্ট ফ্যাক্টর এ রাসায়নিক উপাদান ফ্যাক্টর -VII এর মতো।এর অভাবে রক্ত তঞ্চন ব্যাহত হয়।
11.ফ্যাক্টর-XI বা প্লাজমার থ্রম্বোপ্লাস্টিন রক্ত রসে অবস্থিত প্রোটিন, থ্রম্বোপ্লাস্টিন গঠনে অংশ নেয়।
12.ফ্যাক্টর-XII বা হ্যাগম্যান ফ্যাক্টর রক্তরসে অবস্থিত এ ফ্যাক্টর ক্যালিক্রেইনকে (Kallikrein) সক্রিয় করে এবং প্লাজমাকাইনিন (Plasmakinin) নামক পদার্থ সৃষ্টি করে রক্তনালির ভেদ্যতা ও সম্প্রসারণশীলতা বাড়ায়।
13.ফ্যাক্টর-XIII বা হাইবিন স্টেবিলাইজিং ফ্যাক্টর এটি ক্যালসিয়াম আয়নের সহযোগিতায় রক্তের নরম তঞ্চন পিণ্ডকে অদ্রবণীয় কঠিন তস্তুতে রূপান্তরিত করে।

এসব ক্লটিং ফ্যাক্টর রক্তরস বা প্লাজমায় অবস্থান করে রক্তকে জমাট বাঁধতে সহযোগিতা করে থাকে। তাছাড়াও শরীরের বিভিন্ন কাজে এরা অংশ নিয়ে থাকে।

আরো পড়ুন;  ইলেকট্রন আসক্তি ও তড়িৎ ঋণাত্মকতার মধ্যে পার্থক্য

আরো জানুন;

প্রাইমারি স্ট্যান্ডার্ড ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থ

ধমনি ও শিরার মধ্যে পার্থক্য

আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য 

মানুষের রক্ততঞ্চনকাল কত মিনিট ?

৩-৭ মিনিট 

রক্ত তঞ্চনে সাহায্য করে কোন ভিটামিন?

ভিটামিন-k

রক্ত তঞ্চনে সাহায্য করে কোন প্রোটিন?

ফাইব্রিনোজেন

রক্ত তঞ্চনে সাহায্য করে কোন আয়ন?

ক্যালসিয়াম (Ca2+)

রক্ত তঞ্চনে সাহায্য করে কোন রক্তকণিকা?

অনুচক্রিকা

 

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা আমি মোঃ ফরিদুল ইসলাম পেশায় একজন শিক্ষার্থী এবং এই ওয়েবসাইটির এডমিন। পড়াশোনার পাশাপাশি লিখালিখি করতে পছন্দ করি। বিগত কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লিখালিখি করে আসতেছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখনীর মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ

1 thought on “রক্ত তঞ্চনের ১৩ টি ক্লটিং ফ্যাক্টরের নাম এবং কাজ”

Leave a Comment