ধমনি ও শিরার মধ্যে পার্থক্য

ধমনি ও শিরার মধ্যে পার্থক্য,পালমোনারি যে সব নালিকার মাধ্যমে রক্ত সংবহিত হয়, অর্থাৎ রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে দেহের বিভিন্ন অংশে বাহিত হয় এবং দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে পুনরায় হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে, সেগুলোকে রক্তবাহিকা বলে।

আকার-আকৃতি ও কাজের ভিত্তিতে রক্তবাহিকা তিন প্রকার-

  • ধমনি
  • শিরা
  • কৈশিকজালিকা

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় হলো হলো রক্তবাহিকা নিয়ে ধমনি কি? শিরা কি? ধমনি ও শিরার মধ্যে পার্থক্য আমরা জানবো –

১. ধমনি (Arteries)

যে সব রক্তবাহিকার মাধ্যমে সাধারণত অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিন্ড থেকে সারা দেহে বাহিত হয়, তাদের ধমনি বলে। এক্ষেত্রে পালমোনারি ধমনি ব্যতিক্রম: এটি CO–সমৃদ্ধ রক্তকে হৃৎপিণ্ড থেকে ফুসফুসে পৌঁছে দেয়। ধমনিপ্রাচীর তিনস্তরবিশিষ্ট, যথা- (ক) যোজক টিস্যুতে গঠিত বাইরের স্তর টিউনিকা অ্যাডভেনটিসিয়া বা টিউনিকা এক্সটার্না (tunica adventitia or tunica externa); (খ) পেশিতন্ত্র নির্মিত মাঝের স্তর টিউনিকা মিডিয়া (tunica media); এবং (গ) এন্ডোথেলিয়ামে গঠিত অন্তঃস্তর টিউনিকা ইন্টিমা (tunica intima)। ধমনিপ্রাচীর বেশ পুরু, দৃঢ় ও স্থিতিস্থাপক।

ধমনি ক্রমশ শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে অবশেষে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম রক্তজালক বা কৈশিকজালিকা-য় সমাপ্ত হয়। এভাবে, ধমনি হৃৎপিণ্ড থেকে শুরু হয় এবং কৈশিকজালিকায় শেষ হয়।

২. শিরা (Veins)

যে সব রক্তবাহিকার মাধ্যমে সাধারণত কার্বন ডাইঅক্সাইডসমৃদ্ধ রক্ত দেহের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে হৃৎপিণ্ডে বহন করে নিয়ে আসে, তাদের শিরা বলে। এক্ষেত্রে পালমোনারি শিরা ব্যতিক্রম। এটি ফুসফুস থেকে O₂-সমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ডে নিয়ে আসে। শিরাপ্রাচীর ধমনির অনুরূপ ৩টি স্তরে গঠিত হলেও প্রাচীর বেশ পাতলা ও নরম কিন্তু স্থিতিস্থাপক নয়। এদের লুমেন (lumen) বড়। ধমনি প্রান্তের কৈশিকজালিকাগুলো ক্রমশ একত্রিত হয়ে প্রথমে সূক্ষ্ম শিরা ও পরে বড় শিরা গঠন করে। এভাবে, শিরা কৈশিকজালিকা থেকে শুরু হয় এবং হৃৎপিণ্ডে শেষ হয়।

আরো পড়ুন;  গ্লাইকোজেনেসিস,গ্লুকোনিয়োজেনেসিস,গ্লাইকোজেনোলাইসিস

৩.কৈশিকজালিকা

শুধুমাত্র একস্তরবিশিষ্ট এন্ডোথেলিয়ামে গঠিত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম রক্তবাহিকা যা প্রশাখা-ধমনি ও শিরার সংযোগস্থলে জালিকাকারে বিন্যস্ত, সেগুলোকে রক্তজালক বা কৈশিকজালিকা বলে। কৈশিকজালিকার রক্ত ও টিস্যুরসের মধ্যে ব্যপন ক্রিয়ায় খাদ্যসার, শ্বসনবায়ু, রেচনদ্রব্য ইত্যাদির আদান-প্রদান ঘটে।

আরো জানুন;

রক্ত তঞ্চনের ১৩ টি ক্লটিং ফ্যাক্টরের নাম এবং কাজ

ধমনি ও শিরার মধ্যে পার্থক্য

ধমনি বিষয় শিরা
হৃৎপিণ্ডে উৎপন্ন হয়ে থাকে । উৎপত্তি কৈশিকজালিকা থেকে উৎপন্ন হয়ে থাকে।
হৃৎপিণ্ড থেকে দেহের দিকে পরিবহন করে। রক্ত প্রবাহ দেহে থেকে হৃৎপিণ্ডের দিকে পরিবহন করে।
পালমোনারি ধমনি ছাড়া অন্য ধমনিগুলো -সমৃদ্ধ রক্ত পরিবহন করে। রক্ত উজ্জল লাল বর্ণের। রক্তের প্রকৃতি পালমোনারি শিরা ছাড়া অন্য শিরাগুলো CO₂-সমৃদ্ধ রক্ত পরিবহন করে। রক্ত কালচে বর্ণের।
প্রাচীর বেশ পুরু ও স্থিতিস্থাপক। কম পুরু ও অস্থিতিস্থাপক।
লুমেনের ধরণ লুমেন ছোট লুমেন বেশ বড়।
কপাটিকা কপাটিকা থাকে না। সেমিলুনার কপাটিকার মতো কপাটিকা থাকে।
সমাপ্তি কৈশিকজালিকায় হৃৎপিণ্ডে

FAQ

ধমনিতে কপাটিকা থাকে কিন্তু শিরায় থাকে না।

পালমোনারি ধমনি কার্বন ডাই অক্সাইড যুক্ত রক্ত বহন করে এটি ব্যতিক্রম।

 

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা আমি মোঃ ফরিদুল ইসলাম পেশায় একজন শিক্ষার্থী এবং এই ওয়েবসাইটির এডমিন। পড়াশোনার পাশাপাশি লিখালিখি করতে পছন্দ করি। বিগত কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লিখালিখি করে আসতেছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখনীর মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ

Leave a Comment