গ্লাইকোজেনেসিস,গ্লুকোনিয়োজেনেসিস,গ্লাইকোজেনোলাইসিস

গ্লাইকোজেনেসিস  (Glycogenesis)

অস্ত্র থেকে হেপাটিক পোর্টাল শিরার মাধ্যমে চিনি (যেমন-গ্লুকোজ) যকৃতে প্রবেশ করে। এ শিরাটি বিভিন্ন মাত্রায় চিনি বহনকারী একমাত্র রক্তবাহিকা। শর্করা বিপাকে যকৃতই দেহে গ্লুকোজ মাত্রা প্রতি ১০০ ঘন সেন্টিমিটারে ৯০ মিলিগ্রাম গ্লুকোজ হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করে। যে ধরনের খাবারই গ্রহণ করা হোক না কেন রক্তে গ্লুকোজ মাত্রা যেন না বাড়ে বা কমে, যকৃত তা প্রতিরোধ করে। গ্যালাক্টোজ, ফ্রুক্টোজসহ সমস্ত হেক্সোজ শর্করাকে যকৃত গ্লুকোজে পরিবর্তিত করে গ্লাইকোজেন (glycogen) নামক অদ্রবণীয় পলিস্যাকারাইড হিসেবে জমা রাখে। গ্লুকোজ থেকে গ্লাইকোজেন রূপান্তর প্রক্রিয়াটিকে গ্লাইকোজেনেসিস বলে। প্রক্রিয়াটি ইনসুলিনের উপস্থিতিতে উদ্দীপ্ত হয়। ইনসুলিন (insulin) হচ্ছে রক্তে চিনির লেভেল বেড়ে গেলে তার প্রতি সাড়া হিসেবে অগ্ন্যাশয়ের আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স (Islets of Langerhans) থেকে উৎপন্ন হরমোন ।

গ্লাইকোজেনেসিস,গ্লুকোনিয়োজেনেসিস,গ্লাইকোজেনোলাইসিস
গ্লাইকোজেনেসিস,গ্লুকোনিয়োজেনেসিস,গ্লাইকোজেনোলাইসিস

 

গ্লুকোনিয়োজেনেসিস  (Gluconeogenesis)

যে জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অশর্করা জাতীয় উপাদান থেকে গ্লুকোজ শর্করা উৎপন্ন হয়, তাকে গ্লুকোনিয়োজেনেসিস বলে এটি শর্করার উপচিতিমূলক বিপাক। এটি প্রধানত যকৃত কোষের সাইটোপ্লাজমে সংঘটিত হয়। দেহের চাহিদার প্রেক্ষিতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অত্যধিক কমে গেলে যকৃত অ্যামিনো এসিড, ল্যাকটিক এসিড, পাইরুভিক এসিড, গ্লিসারল ইত্যাদি অশর্করা জাতীয় উপাদান থেকে গ্লুকোজ তৈরি করে রক্তে প্রেরণ করে, ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ে। এ প্রক্রিয়াটি গ্লুকাগন হরমোন দ্বারা উদ্দীপ্ত হয়। এভাবে যকৃত রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা ৯০ মিলিগ্রাম/১০০ ঘন সেন্টিমিটার বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

গ্লাইকোজেনোলাইসিস (Glycogenolysis)

 রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলে গ্লাইকোজেনোলাইসিস প্রক্রিয়ায় যকৃতে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন ভেঙ্গে গ্লুকোজ তৈরি হয় এবং রক্তে মিশে যায়। এ প্রক্রিয়াটি এপিনেফ্রিন ও গ্লুকাগন হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হয়।

আরো পড়ুন;  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি তথ্য ২০২৪-২০২৫

লাইপোজেনেসিস (Lipogenesis)

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যদি এমন পরিমাণ বেড়ে যায় যে তা শক্তি উৎপাদন ও গ্লাইকোজেন সঞ্চয় ক্ষমতার মাত্রাকে ছাড়িয়ে যায় তখন ইনসুলিন হরমোনের প্রভাবে যকৃত অতিরিক্ত গ্লুকোজকে ট্রাইগ্লিসারাইড (triglyceride =TG)-এ রূপান্তর করে। এ ট্রাইগ্লিসারাইড কোষে চর্বি হিসেবে সঞ্চিত হয়। এজন্য অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাদ্য খেলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড (TG) মাত্রা বেড়ে যায় যা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান রিস্ক ফ্যাক্টর।

গ্লাইকোজেনেসিস ও গ্লাইকোজেনোলাইসিসের মধ্যে পার্থক্য

পার্থক্যের বিষয় গ্লাইকোজেনেসিস গ্লাইকোজেনোলাইসিস
প্রকৃতি এ প্রক্রিয়ায় গুকোজ গ্লাইকোজেনে রূপান্তরিত হয়। এ প্রক্রিয়ায় গ্লাইকোজেন ভেঙ্গে গুকোজেপরিণত হয়।
ক্রিয়াস্থল যকৃতে। মাংসপেশি ও যকৃতে।
প্রভাবক ইনসুলিন। গুকাগন।
গুরুত্ব রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায় বা ভারসাম্য বজায় রাখে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে (শর্করা কমে গেলে)।

১.কোন হরমোনের উপস্থিতিতে গ্লাইকোজেনেসিস প্রক্রিয়াটি উদ্দীপ্ত হয়?

ইনসুলিন 

২.গ্লাইকোজেনেসিস প্রক্রিয়ায় কোন হরমোন সাহায্য করে?

ইনসুলিন 

৩.গ্লাইকোজেনোলাইসিস কোথায় ঘটে?

সাইটোপ্লাজমে 

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা আমি মোঃ ফরিদুল ইসলাম পেশায় একজন শিক্ষার্থী এবং এই ওয়েবসাইটির এডমিন। পড়াশোনার পাশাপাশি লিখালিখি করতে পছন্দ করি। বিগত কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লিখালিখি করে আসতেছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখনীর মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ

Leave a Comment