আজকের এই পোস্ট এ আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টপিক অরবিট এবং অরবিটাল নিয়ে আলোচনা করবো । অরবিট ও অরবিটালের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করবো কি কি ভিন্নতা, সাদৃশ্যতা রয়েছে তা অনুধাবন করার চেষ্টা করবো ।
আপনি যা জানতে পারবেন
অরবিট কি?
পরমাণুর গঠনের ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াসের অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়েছে। নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ইলেকট্রন নির্দিষ্ট পথে আবর্তন করে। পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দূরত্বে নিউক্লিয়াসের চারদিকে ইলেকট্রনসমূহের পরিভ্রমণের জন্য কতকগুলো বৃত্তাকার ও উপবৃত্তাকার স্থির শক্তিস্তর থাকে। এসব বৃত্তাকার ও উপবৃত্তাকার স্থির শক্তিস্তরকে অরবিট বলা হয়।
অরবিটাল কি?
অরবিটাল হলো তরঙ্গ বলবিদ্যার গাণিতিক ফাংশন যা দ্বারা কোনো পরমাণুতে ইলেকট্রনের অবস্থান ও ঘনত্ব ব্যাখ্যা করা যায়। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা অনুসারে ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের খুব কাছেও থাকতে পারে আবার নিউক্লিয়াস থেকে অনেক দূরেও থাকতে পারে। অরবিটাল নিউক্লিয়াসের চারদিকে আবর্তনশীল ইলেকট্রনের পাওয়ার সম্ভাবনা ও সম্ভাবনাময় স্থান।
নিউক্লিয়াসের চারিদিকে যেসব ত্রিমাত্রিক অঞ্চলে আবর্তনশীল ইলেকট্রনের তথা ইলেকট্রন মেঘের পাওয়ার সম্ভাবনা 90-০৫% থাকে, ইলেকট্রন মেঘের এ ত্রিমাত্রিক অঞ্চলকে অরবিটাল বলা হয়।
অরবিট ও অরবিটালের মধ্যে পার্থক্য
অরবিট | অরবিটাল |
১.ইলেকট্রনকে কণা হিসেবে ধরে নিয়ে যে পথ একমাত্রিক বা দ্বিমাত্রিক বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার পথে উহা নিউক্লিয়াসের চারদিকে আবর্তন করে, সে পথই হলো অরবিট। | ১.ইলেকট্রনকে তরঙ্গ হিসেবে ধরে নিয়ে নিউক্লিয়াসের চারিদিকে খুবই সামান্য বিস্তৃত ত্রিমাত্রিক অঞ্চলে কোনো বিশেষ মুহূর্তে এর অবস্থান ও প্রাপ্তির সম্ভাবনাময় স্থানকে অরবিটাল বলে। |
২.কোয়ান্টাম মতবাদের উপর ভিত্তি করে অরবিটের ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । | ২.তরঙ্গ বলবিদ্যা মডেলের উপর ভিত্তি করে অরবিটালের ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। |
৩.অরবিট কোনো শক্তিস্তরের ইলেকট্রনের দ্বিমাত্রিক অঞ্চলের অবস্থা নির্দেশ করে। | ৩.অরবিটাল কোনো শক্তিস্তরের ইলেকট্রনের ত্রিমাত্রিক অঞ্চলের অবস্থা নির্দেশ করে। |
৪.প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা n = 1, 2, 3, 4, 5 ইত্যাদি মান অনুযায়ী অরবিটালগুলোকে যথাক্রমে K, L, M, N, O ইত্যাদি দিয়ে প্রকাশ করা হয়। | ৪.সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা। এর মান 0, 1, 2,3 অনুযায়ী অরবিটালগুলোকে যথাক্রমে s, p, d, f দ্বারা প্রকাশ করা হয়। |
৫.K, L, M. N ইত্যাদি অরবিটালগুলোতে নির্দিষ্ট সংখ্যক ৫. ইলেকট্রন বর্তমান থাকে। এ সংখ্যা মান 2n², এখানে n প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা। | ৫.প্রতিটি অরবিটালে বা উপ-উপশক্তিস্তরে সর্বাধিক দুটো ইলেকট্রন ধারণ করতে পারে |
৬.অরবিট এর ধারণা অনুযায়ী, নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে ইলেকট্রনের আবর্তন সুনির্দিষ্ট বৃত্তাকার পথে ঘটে। অর্থাৎ অরবিট বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার। | অরবিটালের আকৃতি বিভিন্ন। যেমন, ৪-অরবিটাল সুষম গোলাকার, p-অরবিটাল অক্ষ বরাবর ডাম্বেলাকার, d- অরবিটাল একটু জটিলতর হয়। |
৭.অরবিট এর ধারণা হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতির মেনে চলে না। | ৭.অরবিটালের ধারণা হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি মেনে চলে। |
৮.অরবিটের কোনো দিক ধর্ম নেই। | ৮.s-অরবিটাল ভিন্ন অন্যান্য অরবিটালের দিক ধর্ম বর্তমান আছে। |
৯.অরবিটে ইলেকট্রনের অবস্থান ও ভরবেগ নির্দিষ্ট। | ৯.অরবিটালে ইলেকট্রনের অবস্থান নির্দিষ্ট নয়। অরবিটক নিউক্লিয়াসের চারদিকে বিস্তৃত ত্রিমাত্রিক অঞ্চলে ইলেকট্রনের অবস্থানের সম্ভাবনার সর্বাধিক অঞ্চলকে নির্দেশ করে। |
১০. অরবিটের ধারণায় ইলেকট্রনকে কণা হিসেবে ধরা হয় | ১০. সঙ্গে কনা ও তরঙ্গ হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে। |
1 thought on “অরবিট ও অরবিটালের মধ্যে পার্থক্য”